
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর অবদান
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর অবদান: পদ্মা সেতুর অর্থায়ন ও ব্যয়, বাজেট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিজস্ব অর্থায়ন’ নামে পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতুর স্থায়িত্বকাল,প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও পরামর্শক, পদ্মা সেতুর স্থায়িত্বকাল।

পদ্মা সেতুর অর্থায়ন ও ব্যয়
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর অবদান এটা সর্বজনস্বীকৃত যে স্বাধীনতা অর্জন যত কঠিন, তার চেয়ে বেশি কঠিন স্বাধীনতা রক্ষা বা সুফল অর্জন করে একে টেকসই করা। স্বপ্নের সেতু পদ্মা এখন বাস্তবে বিদ্যমান।
যেসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য কীর্তিনাশা নামে খ্যাত প্রমত্তা পদ্মার ওপর এক যুগের বেশি সময় নিয়ে ৩২ হাজার কোটি (মওকুফকৃত সিডি ভ্যাট আইটিসহ চূড়ান্ত হিসাব এলে এই পরিমাণ বাড়তে পারে) টাকার বেশি ব্যয়ে বাংলাদেশ ও এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বের ২৫তম দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হলাে, সেই সেতুর ফিজিবিলিটি রিপাের্টে আঞ্চলিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আর্থসামাজিক অবস্থা-ব্যবস্থার উন্নয়নের আশাবাদ উঠে এসেছিল, তা অর্জনের পথনকশায় অগৌণে নজর দেয়া দরকার।
কেননা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন যেভাবে দেখানাে হােক না কেন, আলটিমেটলি এটি জনগণের করের টাকায় নির্মিত হয়েছে বলে বিবেচিত হবে এবং সে কারণেই এর সুফল প্রাপ্তিটাও জনগণের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার। পদ্মা সেতুর উপকারভােগী সমাজ ও অর্থনীতিকে স্বয়ম্ভর ও সক্ষম করে তুলতে পারলেই সেতুর সার্থকতা প্রতিপন্ন হবে। পদ্মা সেতু চালু হলাে। আজ থেকে টোল দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে।
সেতু বিভাগ এ সেতু থেকে এক বছরে প্রায় পৌনে ৫০০ কোটি টাকা আয় করতে চায়। কারণ এ আয় থেকেই সেতুর টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের ব্যয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নেয়া ঋণ পরিশােধ করা হবে। সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে দিনে গড়ে আট হাজার যানবাহন চলাচলের প্রত্যাশা, তা পর্যায়ক্রমে বাড়বে। পদ্মা সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, ২০২৫ সালে দিনে সেতু দিয়ে ৪১ হাজার যানবাহন চলাচল করবে।
সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এ পূর্বাভাস অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। কারণ সেতু চালুর তিন-চার বছরের মধ্যে শিল্প-কারখানা বাড়বে। নতুন নতুন বাস রুট হবে। শুরুতে এজন্য লক্ষ্যমাত্রা কম ধরা হয়েছে। সুতরাং সেতু বিভাগের প্রথম বিবেচ্য বিষয় হবে প্রথম দিকে দিনে গড়ে ৮ হাজার ও আড়াই বছরের মাথায় ২০২৫ সালে দিনে সেতু দিয়ে ৪১ হাজার যানবাহন চলাচল করার প্রাক্কলন বাস্তবতায় কম-বেশি হবে।

বাজেট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিজস্ব অর্থায়ন’ নামে পদ্মা সেতু
বাজেট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিজস্ব অর্থায়ন’ নামে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় নির্বাহ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেতু বিভাগকে এ অর্থ ঋণ হিসেবে দেয়া হয়েছে। ৩৫ বছরে ১ শতাংশ হারে সুদসহ তা ফিরিয়ে দিতে হবে। ২০১৪ সালে ব্যয় শুরু ও তুঙ্গে পৌঁছলেও ২০১৯ সালের আগস্টে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও সেতু বিভাগের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।
চুক্তি অনুসারে প্রথম বছর পদ্মা সেতু থেকে ৪৬৮ কোটি টাকা আয় হবে। এর মধ্যে একটি অংশ টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান সরকারের ঋণ মওকুফ তহবিলের অর্থ ৩০০ কোটি টাকা। এ অর্থ পরিশােধ করতে হবে না।
ফলে সেতু বিভাগকে আসল হিসেবে ২৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা সরকারকে ফেরত দিতে হবে। এর সঙ্গে বাড়তি ১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। অর্থাৎ সুদাসলে পরিশােধ করতে হবে ৩৬ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা।
প্রকল্পের জাতীয় গর্ব ও গুরুত্ব বিবেচনায় সেতুর জন্য আমদানীকৃত যন্ত্রপাতি সরঞ্জাম সামগ্রীর ওপর শুল্ক ভ্যাট মওকুফ এবং দেশী-বিদেশী ঠিকাদার, কনসালট্যান্ট, বিশেষজ্ঞদের আয়কর থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়ে থাকলে তার হিসাবও প্রকল্পের মােট ব্যয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করে এর ভিত্তিতে প্রকল্পের রেট অব রিটার্নের সময়গত হিসাব অনুপাত নির্ধারিত হবে।
পদ্মা সেতুর স্থায়িত্বকাল
পদ্মা সেতুর স্থায়িত্বকাল ধরা হয়েছে ১০০ বছর। এ সময়ে সেতুটির গুরুত্ব (কেপিআই হিসেবে বিবেচনায় টোলের টাকা দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ও সার্ভিস রক্ষণাবেক্ষণে বড় ব্যয় আবশ্যক হবে। সে কারণে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও আশানুরূপ টোল আদায়ের জন্য পদ্মা সেতু পরিচালনায় রাষ্ট্রায়ত্ত একটি কোম্পানি গঠন করার সিদ্ধান্ত সরকারের বিবেচনাধীন আছে বলে জানা যায়।
সরকার যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের সময় যমুনা সেতু বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করেছিল। পরে সেটিই সেতু কর্তৃপক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। সেতু কর্তৃপক্ষ সেতু বিভাগের একটি সংস্থা। এর অধীনে মুক্তারপুর সেতুও রয়েছে।
পদ্মা সেতুর জন্য স্বতন্ত্র সত্তা গঠন করতে নতুন কোম্পানি গঠনে না গিয়ে সেতু কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বাড়ানােই হবে সমীচীন। নতুন করে কোম্পানি গঠনের অর্থ হবে বাড়তি ব্যয়, সমান্তরাল নিয়ন্ত্রণ | নিয়ামক ব্যবস্থাপনা, যেখানে সুসমন্বয়ের অভিজ্ঞতা ভালাে নয় বাংলাদেশে।

প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও পরামর্শক
বর্তমানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও পরামর্শক বাদে পদ্মা সেতু প্রকল্পে মােট জনবল ৯৫। এর মধ্যে প্রকল্প পরিচালকসহ বড় পদে রয়েছেন ৩২ জন। তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর, রেলওয়েসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে এসেছেন।
প্রকল্পের কাজ শেষ হলে তারা নিজ নিজ বিভাগে ফিরে যাবেন। কারাে কারাে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার সময় হয়ে যাবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে সহকারী পরিচালক, উপসহকারী পরিচালক, হিসাবরক্ষক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, গাড়িচালক, অফিস সহায়কসহ বিভিন্ন পদে আছেন ৬৩ জন। তাদের চাকরি স্থায়ী করা নিয়ে প্রশাসনিক জটিলতার জট খােলার প্রযােজনীয়তা দেখা দেবে।
টোল আদায়ের দায়িত্ব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য টোল আদায়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপােরেশন (কেইসি) ও পদ্মা সেতু নির্মাণে নিয়ােজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে (এমবিইসি)। তারা পাঁচ বছরে ৬৯৩ কোটি টাকা পাবে।
ঠিকাদারদের তদারক করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। অতীতের ক্ষয়ক্ষতি ও আইনি/পদ্ধতিগত জটিলতা উদ্ভবজনিত অভিজ্ঞতার আলােকে এক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা ও তদারকির আবশ্যকতা থেকে যাবে। তাদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মধ্যে বিরােধ-বিপত্তির ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
প্রকল্প দলিলে সেতু নির্মাণের উদ্দেশ্য-বিধেয় অংশে বলা হয়েছে, দক্ষিণাঞ্চল বা পদ্মাপারের মানুষ বরাবরই অবহেলিত ছিল। দারিদ্র্য তাদের নিত্যসঙ্গী। পদ্মা সেতু জাতীয় অর্থনীতি জোরদারে, বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে অবদান রাখবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পদ্মা সেতু
প্রচুর সম্ভাবনা আর ইতিহাস-ঐতিহ্যে ভরপুর অসংখ্য স্থাপনা বুকে ধারণ করলেও কেবল প্রমত্তা পদ্মার কারণে এতদিন সবকিছুই যেন। ছিল নক্ষত্রসমান দূরত্বে। বিশাল নদী পাড়ির ঝক্কি এড়াতে অনেকেই বিনিয়ােগে ও সমাজসেবায় আসতে চাইতেন না দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এ ২১ জেলায়। সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এভাবে যুগের পর যুগ পিছিয়ে থাকার সেই কষ্ট দূর হওয়ার প্রত্যাশায় এ সেতুকে ঘিরে তাই এখন শিল্প-বাণিজ্য আর পর্যটন খাতে নয়াবিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে ফরিদপুর, বরিশাল, খুলনা ও যশাের অঞ্চলের মানুষ।
পুরােদমে চলছে সম্ভাবনার নতুন ভুবনে প্রবেশের প্রস্তুতি:
রাজধানী ঢাকা থেকে সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের দূরত্ব প্রায় ৫০০ কিলােমিটার। এক্ষেত্রে মাত্র ২৬৬ কিলােমিটার দূরে অবস্থান কুয়াকাটার। এত কাছে থেকেও কুয়াকাটা পর্যটকদের মনােযােগ কাড়তে পারেনি কেবল পদ্মা নদীর কারণে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্থাপিত পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং মােংলা বন্দরের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসার স্বপ্ন এখন বাস্তবে দেখতে চায় দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। বর্তমানে পায়রা ও মােংলা বন্দরে নিয়মিত ভিড়ছে সমুদ্রগামী জাহাজ। ভবিষ্যতে ভারী শিল্প গড়ে উঠবে সেখানে।
ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যােগাযােগে
এরই মধ্যে মােংলা বন্দর এলাকায় বেশ কয়েকটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি চালু হয়েছে এবং গড়ে উঠছে গার্মেন্টসহ রফতানিমুখী শিল্প। একদিকে বন্দর আর অন্যদিকে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যােগাযােগে সময় কমে আসায় পুরাে অঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলবে।
সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে আকরাম পয়েন্টে গভীর সমুদ্রবন্দর হিসেবে স্থান নির্বাচনের ও নির্মাণের। রাজধানী থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় পায়রাবন্দরের দূরত্ব অর্ধেক এবং মােংলা বন্দরের দূরত্ব আরাে কম। সাগরপাড় থেকে পণ্য পৌঁছতেও লাগবে কম সময়। এ বিবেচনায় পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর নিঃসন্দেহে বাড়বে পায়রা ও মােংলা বন্দরের গুরুত্ব। সবকিছু মিলিয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আকাশসমান উচ্চতায়।

পদ্মার দক্ষিণ-পশ্চিম সরাসরি যােগাযােগে
অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে পদ্মার দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়ে। পিরােজপুরের স্বরূপকাঠিতে আটঘর-কুড়িয়ানার পেয়ারা বাগান ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটনকেন্দ্র জলের রাজ্য, বরগুনার তালতলীতে শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রসৈকত এবং টেংরাগিরি বনাঞ্চল, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে জাহাজ মারা সৈকত, গলাচিপার কলাগাছিয়া সাগরপাড়, পিরােজপুরের মঠবাড়িয়ার হরিণপালা, বরগুনার পাথরঘাটার হরিণঘাটা, সাতক্ষীরার সুন্দরবনসংলগ্ন মুনশীগঞ্জ ও বুড়িগােয়ালিনীতে আকাশ নীলা।
“ভােলার মনপুরা-চরফ্যাশন থেকে পটুয়াখালীর গলাচিপা-রাঙ্গাবালী হয়ে কুয়াকাটা এবং বরগুনার পাথরঘাটা-তালতলী পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকাজুড়ে একটি এক্সকুসিভ ট্যুরিস্ট জোন করার চিন্তাভাবনা চলছে। বস্তুত, পুরাে দক্ষিণাঞ্চলই তাে একটা পর্যটনকেন্দ্র। এখানকার খাল-নদী-জঙ্গল আর সাগরপাড়ের বিস্তীর্ণ উপকূল ঘিরে কেবল প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য।
পৃথিবীতে এমন দেশও রয়েছে, যারা কেবল পর্যটন শিল্পের ওপর ভিত্তি করে নিজেদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। পদ্মা নদীর কারণে এত বছর ধরে লােকচক্ষুর অন্তরালে থাকা এ দক্ষিণও এখন মাথা তুলে দাঁড়াবে পর্যটন সেক্টরে।
ব্যাপক হারে প্রসার তাঁতপল্লী
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় তাঁতপল্লী ও কাজির হাট এলাকায় হিমাগার, সে এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল করার পরিকল্পনা চলছে। সেতু পুরােদমে চালু হলে ব্যাপক প্রসার ঘটবে আবাসন শিল্পের। খােদ শরীয়তপুরেই প্রচুর টমেটো হয়।
দাম না পাওয়া এবং পরিবহন জটিলতার কারণে একটা সময় গাছেই টমেটো পচে যায়। এছাড়া আলু, পেঁয়াজ, রসুনসহ অন্যান্য রবিশস্যও ভালাে উৎপাদন হয়। কিন্তু হিমাগার না থাকায় কৃষকরা এগুলাে খুব বেশিদিন ঘরে রাখতে পারেন না।
মৌসুমের সময় কম দামে বিক্রি করে দিতে হয়। সে কারণে কৃষকদের সুবিধার্থে হিমাগার নির্মাণ ফল-ফসল সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়ােগ হিসেবে বিবেচনায় উঠে আসছে।
অর্থনৈতিক জোন করার পরিকল্পনা
শরীয়তপুরের গােসাইরহাট উপজেলার চরাঞ্চলে অর্থনৈতিক জোন করার পরিকল্পনা আছে সরকারের পক্ষ থেকে। উপজেলার আলাওলপুর ইউনিয়নের চরজালালপুর মৌজায় ৭৮৬ একর জমিতে হবে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল। পদ্মা সেতু আবাসন শিল্পের সামনেও বিরাট সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
পদ্মা সেতুকে ঘিরে ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পর্যন্ত আবাসন শিল্পের এক বিশাল হাব তৈরি হয়েছে। একসময়ের পতিত জমিগুলাে এখন মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়েছে।
পদ্মা সেতুর জন্য কেবল সড়কের পাশেই নয়, মাওয়া পয়েন্টের আশপাশে, পদ্মার ওপারে মাদারীপুরের শিবচর এবং শরীয়তপুরের জাজিরা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত আবাসন শিল্পের বিকাশ ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।
শুধু পদ্মা সেতু নির্মাণ ও উদ্বোধন নয়, পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়নের সম্ভাবনার যে দুয়ার উন্মুক্ত করেছে, সেই সম্ভাবনার স্বপ্নকে সত্যিতে পরিণত করার কাজে সরকারসহ সবাইকে এখনই মনােনিবেশ করতে হবে। তাহলেই স্বীকৃত হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর অর্থবহ বাস্তবায়ন।