May 31, 2023
পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন সততা ও আত্মবিশ্বাসের বিজয়ের চিত্র

পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন সততা ও আত্মবিশ্বাসের বিজয়ের চিত্র

পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন বিজয়ের চিত্র: স্বপ্ন যাত্রায় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন, পদ্মা সেতু প্রস্তাবিত ডিজাইন ও ব্যয়,পদ্মা সেতু প্রকল্পের স্থগিতকৃত কাজ পুনরায়, পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণচুক্তি

পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন বিজয়ের চিত্র: অর্থনৈতিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত হলাে দেশের অবকাঠামাে উন্নয়ন, আর এ অবকাঠামােগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে উন্নত যােগাযােগ ব্যবস্থা। গত শতাব্দীর আশি ও নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের সার্বিক যােগাযােগ ব্যবস্থা উন্নয়নে বিশেষ তৎপরতা লক্ষ করা যায়।

সড়ক উন্নয়নের পাশাপাশি বৃহৎ নদ-নদীর ওপর সেতু নির্মাণেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী তথা পূর্বাঞ্চলকে বিভক্তকারী যমুনা নদীর ওপর ৪ দশমিক ৮ কিলােমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম একটি সাহসী উদ্যোগ।

এ সেতুর অধিকাংশ কাজ ১৯৯৮ সালে শেষ হলে তা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। অবশ্য রেললাইন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হতে আরাে কয়েক বছর সময় লাগে।

যমুনা সেতুর সফল বাস্তবায়নের পর কয়েক বছরের মধ্যেই দেশের অর্থনীতিতে উন্নত যােগাযােগ ব্যবস্থার সুফল লক্ষ করা যায়। উত্তরাঞ্চলের কৃষক, শিল্পোদ্যোক্তা, ব্যবসায়ীসহ জনগণের জীবনমান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীসহ পূর্বাঞ্চলের একটি নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ও রেলযােগাযােগ স্থাপনের লক্ষ্যে পদ্মা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের প্রথম মেয়াদে ১৯৯৯ সালে একটি প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়।

জাপান সরকারের উন্নয়ন সহযােগী সংস্থা জাইকা পদ্মা সেতু প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজে এগিয়ে আসে এবং ২০০৫ সালে প্রকল্পের ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি সমাপ্ত হলে এটি কারিগরি ও অর্থনৈতিক দিক থেকে গ্রহণযােগ্য বিবেচিত হয়। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের প্রথম মেয়াদের শেষ দিকে ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

স্বপ্ন যাত্রায় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ করে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন হলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং এ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে ঘােষণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র-নিউজিল্যান্ডঅস্ট্রেলিয়াভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মনসেল-এইকম’কে ডিজাইন পরামর্শক হিসেবে নিয়ােগ দেয়া হয়। পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন সততা ও আত্মবিশ্বাসের বিজয়ের চিত্র

বিবিএর নিজস্ব প্রকৌশলী ছাড়াও এ প্রকল্পে কাজ করার জন্য সরকার যােগাযােগ মন্ত্রণালয়ের সড়ক বিভাগ ও রেলপথ বিভাগ থেকে কতিপয় অভিজ্ঞ প্রকৌশলী ও সরকারের আরাে কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও সংস্থা থেকে কিছু কর্মকর্তাকে প্রেষণে পদ্মা সেতু প্রকল্পে নিয়ােগ দান করে।

প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ ও পরবর্তী সময়ে নিয়ােজিত ঠিকাদারদের কাজ তদারকি ও পরামর্শ প্রদানের জন্য দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি প্যানেল অব এক্সপার্টর্স গঠন করা হয়।

এখানে স্মরণ করা যেতে পারে যে, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ও জাইকা এ তিন উন্নয়ন সহযােগী সংস্থা ঋণসহায়তা প্রদান করেছিল। সে অভিজ্ঞতায় পদ্মা সেতুর প্রথম থেকেই এ তিন সংস্থা পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ প্রদানে রাজি হয়। পরবর্তী সময়ে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকও (আইডিবি) ঋণ প্রদানে এগিয়ে আসে।

সরকার ও উন্নয়ন সহযােগীদের সম্মতিতে প্রধান অর্থায়নকারী বিশ্বব্যাংককে অর্থায়নকারী সংস্থাগুলাের সমন্বয় কমিটির টাস্ক টিম লিডার’ নিয়ােগ করা হয়। বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সহযােগীদের সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে ডিজাইন পরামর্শক নিয়ােগের শুরু থেকেই যাবতীয় কাজ উন্নয়ন সহযােগীদের টাস্ক টিমকে সঙ্গে নিয়ে সম্পন্ন করা হতাে, যদিও তাদের সঙ্গে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরে কিছুটা সময় লাগে।

পদ্মা সেতু প্রস্তাবিত ডিজাইন ও ব্যয়

প্রকল্পের প্রস্তাবিত ডিজাইন অনুযায়ী খরচ চূড়ান্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর সংশােধিত ডিপিপি একনেক সভায় অনুমােদিত হয়। এ সময় প্রকল্প ব্যয় দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা বা ২ হাজার ৯৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য ১৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বা ২ হাজার ৩৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সরকারের অংশ (জিওবি) ৪ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা বা ৬১৭ মিলিয়ন ডলার। সংশােধিত ডিজাইন অনুযায়ী মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলােমিটার, রােড ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ৮ কিলােমিটার, রেল ভায়াডাক্ট শূন্য দশমিক ৫৩২ কিলােমিটার অর্থাৎ সেতুর মােট দৈর্ঘ্য ১০ দশমিক ৪৮২ কিলােমিটার। নদীশাসন কাজ হবে ১৪ কিলােমিটার এবং উভয় দিকে সংযােগ সড়ক ১৫ কিলােমিটার।

উন্নয়ন সহযােগীদের সঙ্গে সরকারের নেগােসিয়েশনের পর তাদের প্রতিশ্রুত ঋণের পরিমাণ চূড়ান্ত করা হয়। ২০১১ সালের জুনের মধ্যে চার উন্নয়ন সহযােগী সংস্থার সঙ্গেই ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয়। বিশ্বব্যাংক ১ হাজার ২০০ মিলিয়ন, এডিবি ৬১৫ মিলিয়ন, জাপান/জাইকা ৪৩০ মিলিয়ন ও আইডিবি ১৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করে। পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন সততা ও আত্মবিশ্বাসের বিজয়ের চিত্র

পদ্মা সেতু প্রকল্পের ভৌকাজকে মূলত পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়। যথা ১. মূল সেতু, ২. নদীশাসন, ৩. জাজিরা প্রান্তের অ্যাপ্রােচ রােড, ৪. সার্ভিস এরিয়া ও টোল প্লাজা, ৫. মাওয়া অ্যাপ্রােচ রােড ও টোল প্লাজা ইত্যাদি। ভৌতকাজের সব প্যাকেজের টেন্ডার আহ্বান, মূল্যায়ন ইত্যাদি যুগপৎ চলতে থাকে। এসব কাজে স্বচ্ছতার জন্য প্যানেল অব এক্সপার্টসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে আলাদা মূল্যায়ন কমিটি গঠন হয়।

এসব কমিটিতে বুয়েটের অধ্যাপক, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, সরকারের বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তা, বিশ্বব্যাংক মনােনীত পরামর্শক ও বিবিএর প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের রাখা হয়। ভৌকাজ ছাড়াও প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালট্যান্ট নিয়ােগের প্রস্তাব মূল্যায়নের কাজও চলমান ছিল।

২০১৪ সালের মধ্যে সেতুর কাজ সমাপ্তির লক্ষ্যে সার্বিক কাজ দ্রুতগতিতে চলমান অবস্থায় ২০১১ সালের জুলাইআগস্টে উন্নয়ন সহযােগী বিশ্বব্যাংক (লিড পার্টনার) প্রকল্পে কথিত দুর্নীতির অভিযােগ তােলে এবং সেপ্টেম্বর থেকে প্রকল্পের কাজ স্থগিত করে দেয়।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের স্থগিতকৃত কাজ পুনরায়

 বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে দুর্নীতির অভিযােগ উত্থাপনের পর কয়েক মাস। অতিবাহিত হলেও দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেয়া কিংবা পদ্মা সেতু প্রকল্পের স্থগিতকৃত কাজ পুনরায় শুরু করা—এর কোনােটিই করেনি।

টাস্ক টিমে কর্মরত এডিপি ও জাইকা প্রতিনিধি জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পের এ পর্যন্ত সম্পাদিত কাজে কোনাে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র’ বা অনিয়ম হয়নি বলে তারা নিশ্চিত। কিন্তু যৌথ অর্থায়নকারী লিড পার্টনার সরে গেলে তারা অর্থায়ন করতে পারে না। এদিকে প্রধানমন্ত্রী ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কোনাে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় বলেন, বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির প্রমাণ | দিতে না পারলে তাদের টাকাই নেব না। পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন সততা ও আত্মবিশ্বাসের বিজয়ের চিত্র

দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পাদিত হয়েছে। দুর্নীতির অভিযােগ তােলায় বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করেন; উপরন্তু বিশ্বব্যাংকেও দুর্নীতি আছে বলে মন্তব্য করেন। |

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়ে দেয়, কানাডীয় পুলিশ এসএনসি লাভালিনের বিরুদ্ধে চলমান তদন্ত শেষ না করা পর্যন্ত সেতু | প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে না। এ পর্যায়ে ২০১২ সালের ২৯ জুন বিশ্বব্যাংকে প্রেসিডেন্ট রবার্ট জয়েলিকের কার্যকালের শেষ দিনে। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি বাতিল করে।

পদ্মা সেতু নির্মাণে ঋণচুক্তি

পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যয় নির্বাহের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সঙ্গে ২৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে সেতু বিভাগ। ১ শতাংশ সুদসহ এ ঋণ ৩৫ বছরে ১৪০ কিস্তিতে পরিশােধ করতে হবে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যে পরিমাণ যান চলাচল ও টোল আদায়ের হিসাব করা হয়েছে তাতে আশা করা যায় ৩০ বছরের মধ্যে সেতু নির্মাণের খরচ উঠে যেতে পারে।

যমুনা বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের আগে সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচলের যে সম্ভাব্য হিসাব করা হয়েছিল বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ার। ফলে এর চেয়েও বেশি যান চলাচল ও টোল আদায় হচ্ছে।

পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটবে বলে আশা করা যায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বিভিন্ন সামাজিক সূচকে ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। পদ্মা সেতুর মতাে মেগা প্রকল্প নিজের টাকায় বাস্তবায়ন করার সাহসী সিদ্ধান্ত ও কৃতিত্বের কারণেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা সারা বিশ্বে বিশ্বাসযােগ্য হয়েছে। পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন সততা ও আত্মবিশ্বাসের বিজয়ের চিত্র

এ একটিমাত্র আত্মবিশ্বাসী যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত দৃঢ়চেতা, সফল, সৎ ও জনকল্যাণকামী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সারা বিশ্বে মর্যাদার আসনে আসীন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর সাহস ও আত্মবিশ্বাসের জয় হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সাফল্য এবং কথিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযােগ প্রমাণ না হওয়ায় উন্নয়ন সহযােগী সংস্থা ও দেশগুলাের দৃষ্টিভঙ্গিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে।

বিশ্বব্যাংকসহ উন্নয়ন সহযােগীরা বুঝতে পারে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে গিয়ে তারা ভুল করেছে। এখন উন্নয়ন সহযােগীরা বাংলাদেশের বেশ ক’টি মেগা প্রকল্পে নিঃসংকোচে বিনিয়ােগ করছে। জাপানের জাইকা শুধু তিনটি মেট্রোরেল প্রকল্পেই ১০৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। উন্নয়ন সহযােগীদের ঋণসহায়তা ছাড়া পদ্মা সেতু হবে না বলে যারা প্রচার ও ভবিষ্যদ্বাণী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *